কক্সবাজারের উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া বাজাতে বেড়েছে স্থানীয় চাঁদাবাজ চক্রের উপদ্রব। তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না ভালুকিয়া বাজারের ইজারাদার মোহাম্মদ আরমান। এদিকে গালিগালাজ করে প্রকাশ্যে হুমকি এবং মোট অংকের চাঁদা দাবি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে ভালুকিয়া এলাকার জামাল সিকদারের পুত্র মোহাম্মদ সোহেল ও নুর আলমের পুত্র নুরুল আজিম ও কামাল সওদাগরের বিরুদ্ধে৷
জানা গেছে, ১৪৩১ বঙ্গাব্দে ৯৩ হাজার ২০৪ টাকা মূল্যে সর্বোচ্চ ডাককারী হিসেবে বাজার ডাক নেয় উখিয়া সদরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আরমান। ডাক নেওয়ার পরপরই সরকারি শিডিউল মোতাবেক সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করার পর গেল (১৪ এপ্রিল) তাকে বাজার বুঝিয়ে দেন উখিয়া উপজেলা প্রশাসন। কিন্তু বাজার বুঝে নিয়ে পরের দিন থেকে হাসিল তুলতে গেলে বাধে বিপত্তি।
মো. আরমান অভিযোগ করে জানান, বাজার ইজারা নিয়ে হাসিল তুলতে গেলে আচমকা বাঁধা প্রদান শুরু করে বাজার এলাকার জামাল সিকদারের পুত্র মোহাম্মদ সোহেল ও নুর আলমের পুত্র নুরুল আজিমের। পরে কারণ জানতে চাইলে মোটা অংকের চাঁদা দাবি বসে এবং এতে আমি অপারগতা জানালে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করা হয়।
আরমান আরও জানান, ‘উখিয়া উপজেলায় দশটি হাট বাজার ইজারাদারের মধ্যে আমি একমাত্র সম্পূর্ণ টাকা জমা দেওয়ার পর আমাকে পহেলা বৈশাখ থেকে ভালুকিয়া হাট-বাজার উপজেলা প্রশাসন বুঝিয়ে দিলেও এখনো এক টাকাও হাসিল তুলতে দেয়নি ওই প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। এ নিয়ে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করে ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও কোনো সূরাহ পাওয়া যায়নি। যার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছি আমি।’
এদিকে স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভালুকিয়া বাজারে স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট চক্র হাট বাজার ইজারা না পাওয়াতে বাধা সৃষ্টি করেছে৷ গতবারে এই হাটটি থেকে খাস আদায় করা হলেও এবারে প্রভাবশালী সিন্ডিকেটকে চাঁদা না দিলে হাটবাজারে হাসিল তুলতে বাঁধা দেওয়া হচ্ছে৷ এতে রাজস্ব হারাতে পারে সরকার।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মোহাম্মদ সোহেল সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে জানান, ‘আমি ভালুকিয়া হাট-বাজারে হাসিল তুলতে বাধা দিতে পারি না। এই বাজারে আমার কিছু দোকান আছে, আমার দোকানের সামনে থেকে টাকা তুলতে বাধা দেওয়া হয়েছে৷’
ভালুকিয়া বাজারের সাধারণ সম্পাদক আবুল ফজল মেম্বার জানান, ‘একসময় ভালুকিয়া হাট-বাজার খাশ যায়গায় ছিলো। বর্তমানে সে বাজার বিলুপ্ত হয়েগেছে৷ এখন ভালুকিয়া হারুন মার্কেট থেকে কেউ চাইলে হাসিল তুলতে পারে না বা সরকার ইজারা দিতে পারে না৷ যদি উপজেলা প্রশাসন এই হাট বাজার ইজারা দিয়ে থাকে তাহলে উপজেলা প্রশাসনকে হাট বাজার বুঝিয়ে দিতে হবে ইজারাদারকে। এখানে কাউকে হাসিল তুলতে দেওয়া হবে না।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর হোসেন জানান, সরকারি হাট-বাজারে ইজারাদারের কেউ কোনো ধরনের বাধা দিলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভালুকিয়া হাট-বাজারের ইজারাদার সম্পূর্ণ টাকা জমা দিয়েছে, তাকে উপজেলা প্রশাসন হাটবাজার বুঝিয়ে দিয়েছে সেখানে কোনো ব্যক্তি বাধা দিলে ছাড় দেওয়া হবে না। এখনো কোন অভিযোগ পাইনি, অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
পাঠকের মতামত